বাগেরহাট প্রতিনিধি।
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় এক বৃদ্ধ দম্পতিকে অচেতন করে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে ফকিরহাট থানায় লিখিত অভিযোগ দেন বাড়ির মালিক মোঃ মামুন বিশ্বাস।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মামুন বিশ্বাস কর্মসূত্রে ঢাকায় থাকেন। তাঁর পিতা আব্দুস সামাদ বিশ্বাস ও মাতা আলেয়া বেগম উপজেলার জাড়িয়া কাহারডাঙ্গা গ্রামের একতলা বাড়িতে বসবাস করেন। গত ৫ আগস্ট রাত ১১টার দিকে রাতের খাবার শেষে তারা ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন সকাল ৯টার দিকে মামুনের বড় ভাইয়ের স্ত্রী মমতাজ বেগম তাদের না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।
তিনি দেখতে পান বাড়ির পিছনের দরজা আধখোলা এবং ভিতরে ঢোকার পথে টেবিল দিয়ে আটকানো। ঠেলে সরিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলে ঘরের সব জিনিসপত্র এলোমেলো অবস্থায় দেখা যায়। শয়নকক্ষে গিয়ে দেখা যায়, বৃদ্ধ দম্পতি অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন। তাদের শরীর থেকে কানের দুল, চেইন, চুড়িসহ স্বর্ণালঙ্কার নেই। আলমারি ভেঙে আরও স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে চোরেরা।
চুরি যাওয়া মালামালের মধ্যে রয়েছে, প্রায় ৭ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা ও দামী কাপড়চোপড়- মোট আনুমানিক মূল্য প্রায় ১০ লাখ টাকা। আহত দম্পতিকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন।
মামুন বিশ্বাসের অভিযোগে বলেন, আমার পিতা-মাতাকে ওষুধের মাধ্যমে হোক বা স্প্রের মাধ্যমে হোক খাইয়ে অজ্ঞান করে রান্নাঘরের ভেন্টিলেটর বা সিঁড়ির দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে লুটপাট চালিয়েছে।১০-১২ লক্ষ টাকার মত স্বর্ণালংকার ও জিনিসপত্র নিয়ে গেছে । এখন আমার আব্বা আম্মা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে তিন দিন হয়ে গেছে এখনো জ্ঞান ফিরে নাই । আমি আইনের কাছে এদের ধরতে সহায়তা আমরা এখন নিরাপত্তা ভুগছি।
বাড়ির বড় বউ মমতাজ বেগম বলেন, সকালে গরু বের করা হয়নি দেখে প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো তারা রোজা রেখেছেন। পরে দেখি সময় হয়ে যাচ্ছে, তবুও তারা ওঠেননি। তখন গিয়ে ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া পেলাম না। ভিতরে ঢুকে দেখি সবকিছু এলোমেলো, শ্বশুর-শাশুড়ি মেঝেতে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন।
লখপুর ইউনিয়নের মহিলা ইউপি সদস্য তাসলিমা লতা বলেন, সকালে চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি সব এলোমেলো, আসবাবপত্র ভাঙচুর ও দরজার ছিটকিনি ভাঙা। আমার মতে, এটি ডাকাতি, চুরি নয়। সম্ভবত ৪-৫ জন মিলে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি, দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত ও আইনি ব্যবস্থা চাই।
ফকিরহাট থানার ওসি মোঃ আশরাফুল আলম বলেন,অভিযোগ পেয়েছি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বৃদ্ধ দম্পতি সুস্থ হলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হবে।